২য় পর্ব -- ব্যঞ্জনবর্ণ /ব্যঞ্জনধ্বনি
ব্যঞ্জনবর্ণে রয়েছে 'ক' থেকে 'ঁ' পর্যন্ত। ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের ক্ষেত্রে স্বনির্ভর নয়. স্বরধ্বনির সহায়তা ছাড়া বলতে গেলে তার অস্তিত্বই নেই। অর্থাৎ স্বরধ্বনি ছাড়া ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ সম্ভব নয়। ব্যঞ্জনধ্বনি বোঝাতে হস্ (্) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।
ক্ উচ্চারণ সম্ভব নয়। সেই জন্যে এর আগে বা পরে স্বরধ্বনি লাগাতে হয়, যেমন ক্ + অ = ক, অ + ক্ = অক্। এইভাবে ইক্, কি, উক্, কু ইতাদি।
ব্যঞ্জনবর্ণমালা সাজানো হয়েছে প্রতিটি সারিতে পাশাপাশি পাঁচটি করে বর্ণ বসিয়ে। এভাবে রয়েছে আটটি সারি। পাশাপাশি বা উপরনিচ সন্নিবিষ্ট বর্ণের রয়েছে কিছু সমধর্ম। এ নিয়ে কিছু প্রাথমিক আলোচনা করা যায়।
ক-বর্গ -- ক খ গ ঘ ঙ -- কণ্ঠ্য বর্ণ
চ-বর্গ -- চ ছ জ ঝ ঞ -- তালব্য বর্ণ
ট-বর্গ -- ট ঠ ড ঢ ণ -- মূর্ধন্য বর্ণ
ত-বর্গ -- ত থ দ ধ ন -- দন্ত্য বর্ণ
প-বর্গ -- প ফ ব ভ ম -- ঔষ্ঠ বর্ণ
কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত হয় কণ্ঠ্যবর্ণ, অর্থাৎ জিহ্বার গোড়ার অংশ স্পর্শ হয় কণ্ঠে। তালু স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় বলে এদের তালব্য বর্ণ বলা হয়, জিহ্বার মধ্যভাগ তালুতে লাগে। মূর্ধায় জিহ্বার অগ্রভাগ স্পর্শ হয়ে উচ্চারিত হয় মূর্ধন্য বর্ণ। দাঁতে জিহ্বার অগ্রভাগ লেগে উচ্চারিত হয় দন্ত্য বর্ণ। ঠোঁট বা ওষ্ঠ-অধরের স্পর্শে উচ্চারিত হয় ঔষ্ঠ্য বর্ণ।
এর পর রয়েছে
য র ল ব শ
ষ স হ ড় ঢ়
য় ৎ ং ঃ ঁ
য, র, ল, ব, য় হলো অন্তঃস্থ বর্ণ। শ তালব্য বর্ণের গোত্রের। ষ, ড়, ঢ় মূর্ধন্য বর্ণ। হ কণ্ঠ্য বর্ণ। তবে শ, ষ, স, হ উষ্ম বর্ণ হিসেবেও পরিগণিত। ৎ, ং, ঃ হসন্ত বর্ণ , অর্থাৎ হস্ অন্ত 'ত' = ৎ, হস্ অন্ত ঙ = ং এবং হস্ অন্ত হ = ঃ এবং ঁ হলো পরাশ্রয়ী বর্ণ।
ণ-এর উচ্চারণ বাংলায় নেই, তৎসম শব্দের বানানে রয়ে গেছে। স-এর উচ্চারণও বাংলায় নেই বললেই চলে। অন্তঃস্থ ব-এর ব্যবহার আছে যদিও ঔষ্ঠ্য ব-এর সঙ্গে তার পার্থক্য নেই, তাই একটিকে বাদ দিলেই হলো।
ব্যঞ্জনবর্ণ নিয়ে এই আলোচনা আপাতত এই পর্যন্ত থাকল। নিচের ইউটিউব ভিডিওটি বুঝতে আরও সাহায্য করবে। পরে প্রয়োজনে আরও কিছু আলোচনা করা যাবে।
No comments:
Post a Comment