Sunday, November 14, 2021

পর্ব -- ৩ (স্বরচিহ্ন বা কার)



ছোটবেলায় বর্ণমালা শেখার পর আমরা কার শিখি। ওই বয়সে আমাদের বুঝে শেখার ক্ষমতা থাকে না, তাই কিছু ভুল ধারণা থেকে যায়। এই ভুল সংশোধন করে নিতে পারলে বাংলা শেখা সহজ হয়ে যাবে।

বাংলা স্বরধ্বনি যখন অন্য বর্ণ বা ধ্বনির সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন তার পুরোটা ব্যবহৃত হয় না। তার একটা চিহ্ন বা প্রতীক ব্যবহৃত হয়। এই চিহ্ন বা প্রতীককে কার বলা হয়। বাংলা স্বরবর্ণ রয়েছে ১১ টি। অ-এর কোনও চিহ্ন বা অ-কারের ব্যবহার নেই। অতএব বাংলায় রয়েছে মোট ১০ টি কার। 

অ-কার চিহ্ন নেই। আমরা এমনিতে বুঝে নিই যে অ-ধ্বনি ব্যবহৃত হয়েছে।  যেমন, 'বলদ' শব্দটিতে প্রথম ও মধ্যের ধ্বনির সঙ্গে অ-ধ্বনি আছে, অন্তে অ-ধ্বনি উহ্য বা নেই, বলদ = ব্‌+অ+ল্‌+অ+দ্‌। কিন্তু প্রিয়, পূর্ণ ইত্যাদি শব্দের অন্তে অ-ধ্বনির ব্যবহার আছে, প্রিয় = প্‌+র্‌+ই+য়্‌+অ ।  এই নিয়ম বোঝাতে কোনও কার ব্যবহৃত হয় না।

অন্যান্য স্বরবর্ণ ও তার পরিচায়ক কার নিচে রইলঃ

    আ = আ-কার = া

    ই   = ই-কার   =  ি

    ঈ = ঈ-কার  =  ী

    উ = উ-কার  =   ু

    ঊ = ঊ-কার =   ূ

    ঋ = ঋ-কার =   ৃ   

    এ = এ-কার  =  ে

    ঐ = ঐ-কার =  ৈ

    ও  = ও-কার  = ো

    ঔ  = ঔ-কার = ৌ

ক্‌ ধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনির ব্যবহারঃ

ক্‌+আ=কা

ক্‌+ই=কি

ক্‌+ঈ=কী

ক্‌+উ=কু

ক্‌+ঊ=কূ

ক্‌+ঋ=কৃ

ক্‌+এ=কে

ক্‌+ঐ=কৈ

ক্‌+ও=কো

ক্‌+ঔ=কৌ

কার ও তার ব্যবহার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত এই বর্ণনা আশা করি কাজে লাগবে। এর সুত্র ধরে একটু চর্চা করলে বাকিটাও আয়ত্তে এসে যাবে।



Thursday, November 11, 2021

২য় পর্ব -- ব্যঞ্জনবর্ণ /ব্যঞ্জনধ্বনি





 ২য় পর্ব -- ব্যঞ্জনবর্ণ /ব্যঞ্জনধ্বনি 

ব্যঞ্জনবর্ণে  রয়েছে 'ক' থেকে 'ঁ পর্যন্ত। ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের ক্ষেত্রে স্বনির্ভর নয়. স্বরধ্বনির সহায়তা ছাড়া বলতে গেলে তার অস্তিত্বই নেই। অর্থাৎ স্বরধ্বনি ছাড়া ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ সম্ভব নয়। ব্যঞ্জনধ্বনি বোঝাতে হস্ (্) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। 

ক্‌ উচ্চারণ সম্ভব নয়। সেই জন্যে এর আগে বা পরে স্বরধ্বনি লাগাতে হয়, যেমন ক্‌ + অ = ক, অ + ক্‌ = অক্‌। এইভাবে ইক্‌, কি, উক্‌, কু ইতাদি।

ব্যঞ্জনবর্ণমালা সাজানো হয়েছে  প্রতিটি সারিতে পাশাপাশি পাঁচটি করে বর্ণ বসিয়ে। এভাবে রয়েছে আটটি সারি। পাশাপাশি বা উপরনিচ সন্নিবিষ্ট বর্ণের রয়েছে কিছু সমধর্ম। এ নিয়ে কিছু প্রাথমিক আলোচনা  করা যায়।

ক-বর্গ  -- ক    খ     গ     ঘ     ঙ     -- কণ্ঠ্য বর্ণ

চ-বর্গ  --  চ    ছ     জ     ঝ     ঞ  --  তালব্য বর্ণ

ট-বর্গ --   ট     ঠ     ড     ঢ      ণ   --   মূর্ধন্য  বর্ণ

ত-বর্গ --  ত     থ     দ     ধ      ন   --    দন্ত্য বর্ণ 

প-বর্গ -- প     ফ     ব     ভ     ম   --    ঔষ্ঠ বর্ণ

কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত হয় কণ্ঠ্যবর্ণ, অর্থাৎ জিহ্বার গোড়ার অংশ স্পর্শ হয় কণ্ঠে। তালু স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় বলে এদের তালব্য বর্ণ বলা হয়, জিহ্বার মধ্যভাগ তালুতে লাগে। মূর্ধায় জিহ্বার অগ্রভাগ স্পর্শ হয়ে উচ্চারিত হয় মূর্ধন্য বর্ণ। দাঁতে জিহ্বার অগ্রভাগ লেগে উচ্চারিত হয় দন্ত্য বর্ণ। ঠোঁট বা ওষ্ঠ-অধরের স্পর্শে উচ্চারিত হয় ঔষ্ঠ্য বর্ণ।

এর পর রয়েছে 

য     র     ল     ব     শ

ষ     স     হ    ড়     ঢ়

য়     ৎ    ং    ঃ        ঁ

য, র, ল, ব, য় হলো অন্তঃস্থ  বর্ণ। শ তালব্য বর্ণের গোত্রের। ষ, ড়, ঢ় মূর্ধন্য বর্ণ। হ কণ্ঠ্য বর্ণ। তবে শ, ষ, স, হ উষ্ম বর্ণ হিসেবেও পরিগণিত। ৎ,  ং,  ঃ হসন্ত বর্ণ ,  অর্থাৎ হস্‌ অন্ত 'ত' = ৎ, হস্‌ অন্ত ঙ =  ং এবং হস্‌ অন্ত হ = ঃ এবং   ঁ হলো পরাশ্রয়ী বর্ণ। 

ণ-এর উচ্চারণ বাংলায় নেই, তৎসম শব্দের বানানে রয়ে গেছে। স-এর উচ্চারণও বাংলায় নেই বললেই চলে। অন্তঃস্থ ব-এর ব্যবহার আছে যদিও ঔষ্ঠ্য ব-এর সঙ্গে তার পার্থক্য নেই, তাই একটিকে বাদ দিলেই হলো। 

ব্যঞ্জনবর্ণ নিয়ে এই আলোচনা আপাতত এই পর্যন্ত থাকল। নিচের ইউটিউব ভিডিওটি বুঝতে আরও সাহায্য করবে। পরে প্রয়োজনে আরও কিছু আলোচনা করা যাবে।



পর্ব -- ৯ ( নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি, বাংলা সন্ধি ও জরুরি সন্ধি বিচ্ছেদ)

  এই পর্বে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে সন্ধির তালিকা প্রকাশ করব, সঙ্গে থাকবে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধিও। তবে তার আগে বাংলা সন্ধি নিয়ে আ...