ভাষা শিক্ষার একদম প্রথম সিঁড়ি হল বর্ণমালা। আমরা এখান থেকেই শুরু করি। অর্থাৎ এক্কেবারে অ, আ, ক, খ থেকে যাত্রা শুরু। অবহেলা করবেন না। আপনি যদি ‘হ্রস্ব ই’ কে ‘রসই’ বলেন বা লেখেন তাহলে আপনাকে এখান থেকেই শুরু করতে হবে। আর যারা গোড়ায় গলদ দুর করতে চান, (ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষক, সাংবাদিক, ফেসবুককর্মী) তাঁদের অবশ্যই মনোযোগ দেওয়া উচিত।
বর্ণ
আর অক্ষর কিন্তু এক নয়। অক্ষর হল ইংরাজিতে যাকে বলে syllable, অর্থাৎ একসঙ্গে যতটুকু
উচ্চারিত হয়। যেমন, অজ্ঞতা=অগ্+গ+তা। তিনটি অক্ষর বা syllable রয়েছে ‘অজ্ঞতা’ শব্দটিতে।
বর্ণ
আর ধ্বনিও কিন্তু এক নয়। ধ্বনি হল শুধুমাত্র আওয়াজ (sound)। আর বর্ণ হল সেই ধ্বনির
নাম। যেমন, ‘ই’ একটি ধ্বনি, একে একটু বেশি সময় উচ্চারণ করলে ‘ঈ’ হয়। ‘ই’ হল ধ্বনি,
‘হ্রস্ব ই’ হল বর্ণ, ‘ঈ’ হল ধ্বনি, ‘দীর্ঘ ঈ’ হল বর্ণ।
বাংলায় মোট ৫০ টি বর্ণ রয়েছে বর্তমানে। এর মধ্যে ১১ টি হল স্বরবর্ণ এবং ৩৯ টি ব্যঞ্জনবর্ণ।
স্বরবর্ণ
অ আ ই ঈ
উ ঊ ঋ ৯
এ ঐ ও ঔ
এখানে রয়েছে মোট ১২ টি স্বরবর্ণ। এর মধ্যে ৯ (হ্রস্ব লি) এর ব্যবহার বাংলায় নেই, তাই এটাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে বাংলায় এখন রয়েছে ১১ টি স্বরবর্ণ।
স্বরবর্ণকে
তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
হ্রস্বস্বর দীর্ঘ স্বর যৌগিক স্বর
অ আ ঐ
ই ঈ ঔ
উ ঊ
ঋ এ
ও
বাংলায় দীর্ঘস্বর নেই বললেই চলে। একাক্ষরযুক্ত শব্দে ‘আ’ সামান্য দীর্ঘ হয়, যেমন গান, স্বাদ, মা, না ইত্যাদি। অন্যান্য ধ্বনির ক্ষেত্রেও এরকম ব্যতিক্রম আছে। এই সব বিবেচনা করে তৎসম শব্দ ছাড়া অন্য শব্দে দীর্ঘস্বরের ব্যবহার এখন নেই। তৎসম শব্দের বানান পরিবর্তন না করার ফরমান রয়েছে। কিন্তু এতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে বানানের ক্ষেত্রে। আর এই সমস্যা অনেককেই বাংলা লেখালেখি থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছে। যা একটি ভাষার আয়ুর পক্ষে হুমকি স্বরূপ। বর্তমান সময়ে এই বাছবিচার থেকে মুক্তির চেষ্টা চলছে।
স্বরবর্ণ সম্পর্কে আরও অনেক কিছু
বলার রয়েছে। তবে আপাতত এটুকুই যথেষ্ট। পরবর্তী পর্বে আমরা আলোচনা করব ব্যঞ্জনবর্ণ
নিয়ে। আপনাদের কোনও ব্যাপারে অমত থাকলে মন্তব্য করে সংশোধনের সুযোগ দেবেন। ধন্যবাদ
সবাইকে।